খতমে ইউনুস পড়ার নিয়ম - খতমে ইউনুস কতবার পড়তে হয়
খতমে ইউনুস পড়ার নিয়ম আমরা অনেকেই জানিনা। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত তাই আমাদেরকে খতমে ইউনুস পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। তাই আপনাদের সুবিধার্থে আজকের এই আর্টিকেলে খতমে ইউনুস পড়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
আপনি যদি খতমে ইউনুস পড়ার নিয়ম না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেল শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন। তাহলে চলুন দেরি না করে খতমে ইউনুস পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
পেজ সচিপত্রঃ খতমে ইউনুস পড়ার নিয়ম - খতমে ইউনুস কতবার পড়তে হয়
- খতমে ইউনুস পড়ার নিয়ম
- খতমে ইউনুস কতবার পড়তে হয়
- দোয়া ইউনুস খতমের দলিল
- দোয়া ইউনুস বাংলা অর্থসহ
- দোয়া ইউনুস পড়ার ফজিলত
- শেষ কথা
খতমে ইউনুস পড়ার নিয়ম - বড় খতমের দোয়া পড়ার নিয়ম
মানুষের জন্য দোয়া ইউনূসের ফজিলত ও গুরুত্ব অনেক বেশি। এই দোয়ার সঠিক আমলে মানুষ দুনিয়ার যাবতীয় বিপদ আপদ থেকে রক্ষা পাই। আমরা অনেকেই খতমে ইউনুস পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানিনা। যে কোন বালা মসিবত, বিপদ আপদ এবং দুশ্চিন্তা প্রস্থ করে সেখান থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য দোয়া ইউনুস এর কার্যকারিতা অনেক বেশি।
আরো পড়ুনঃ মাশাআল্লাহ শব্দের অর্থ কি - মাশাআল্লাহ জবাব কি
সেজন্য আমাদেরকে খতমে ইউনুস পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। খতমে ইউনুস পড়ার নিয়ম হলো মহান আল্লাহর কাছে একান্ত বিনয় নম্রতা একাগ্রতা এবং পূর্ণ আন্তরিকতার সাথে যাবতীয় বিপদ আপদ থেকে দোয়া করা। তাই আমরা বড় খতমের দোয়া পড়ার নিয়ম জানবো।
১। আমির সানআনি বলেন," যদি বলা হয়, এটা তো একটা জিকির দোয়া নয়, তবে আমরা বলব এটি এমন একটি জিকির যা দ্বারা দোয়া শুরু করা হয়। এটা পড়ার পর যা ইচ্ছা দুয়া করা যাবে।"
২। প্রথমে দোয়া ইউনুস পাঠ করার পরে আল্লাহর কাছে কাঙ্খিত উদ্দেশ্যে দোয়া করলে আশা করা যায় মহান আল্লাহ তাআলা সেই দোয়া কবুল করবেন। এক্ষেত্রে দোয়া কবুলের শর্তাবলী ঠিক থাকতে হবে।
৩। এই দোয়া আমলকারীকে অবশ্যই হালাল উপার্জন থেকে খাদ্য গ্রহণ করতে হবে এবং হালাল অর্থের ওপর জীবন যাপন করতে হবে। দোয়ার শুরুতে আল্লাহর প্রশংসা ও নবী সাঃ এর ওপর দুরুদ পাঠ করতে হবে এবং দেওয়ার শেষে আবার দুরুদ পাঠ করা উত্তম।
৪। অন্তরের ভেতরে দুয়া কবুল হওয়ার বিশ্বাস রাখতে হবে। মনোবল হারানো যাবে না। একান্ত বিনয় নম্রতার সাথে কান্না বিজলিত কন্ঠে বারবার দোয়া করতে হবে। দোয়া করতে করতে বিরক্ত হওয়া যাবে না। দোয়া কবুলের জন্য তাড়াহুড়া করা যাবে না। এটি হলো বড় খতমের দোয়া পড়ার নিয়ম।
খতমে ইউনুস কতবার পড়তে হয়
বিপদ আপদ বা দুশ্চিন্তার সময় খতমে অনুষ্ঠ বেশি বেশি পড়লে আল্লাহতালা সেটির সমাধান করে দেন। অনেকেই খতমে ইউনুস কতবার পড়তে হয়? এ বিষয়টি সম্পর্কে জানেনা। খতমে ইউনুস কতবার পড়তে হয়? এ সম্পর্কে হাদিসের কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা বলা হয়নি। আপনার যতবার ইচ্ছা ও আপনি যতবার সম্ভব পড়তে পারেন।
তবে আমাদের দেশের টাকার বিনিময়ে হুজুর বা মাদ্রাসার ছাত্রদের কে ভাড়া করে এক লক্ষ ২৫ হাজার বার এই দোয়া পড়ে খতমে ইউনুস পড়ানো হয়। এমন দোয়া কেনাবেচা করা বিদআত। আপনি এই দোয়া কতবার পড়বেন এই সম্পর্কে সঠিক কোন তথ্য নেই আপনার পক্ষে যতবার সম্ভব এবং আপনার যতবার ইচ্ছা আপনি এই দোয়াটি পড়তে পারেন তার অনেক ফজিলত রয়েছে।
দোয়া ইউনুস খতমের দলিল
দোয়া ইউনুস খতমের দলিল সম্পর্কে অনেকে জানতে চায়। কেউ যদি দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকে অথবা কোন বিপদ আপদ এর মধ্যে থাকে এবং দোয়া ইউনুস পাঠ করে এবং সে যদি হালাল উপার্জনে তার জীবন পরিচালনা করে তাহলে দোয়া ইউনুস এর উপকারিতা রয়েছে অনেক। নিচে দোয়া ইউনুস খতমের দলিল উল্লেখ করা হলো।
এই বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন, "এবং মাছ ওয়ালার (ইউনুস আঃ) কথা স্মরণ করুন। তিনি ক্রুদ্ধ হয়ে চলে গিয়েছিলেন। অতঃপর মনে করেছিলেন যে, আমি তাঁকে ধৃত করতে পারব না। অতঃপর তিনি অন্ধকারের মধ্যে (মাছের পেটে থাকা অবস্থায়) এ কথা বলে আহবান করলেনঃ
আরো পড়ুনঃ রমজান মাসে কোরআন তেলাওয়াতের ৭টি ফজিলত
"লা ইলাহা ইল্লা আনতা, সুবহানাকা ইন্নী কুনতু মিনায যালেমীন" এর অর্থঃ তুমি ব্যতীত সত্য কোন উপাস্য নেই, তুমি পূত পবিত্র-নিশ্চয় আমি জালিমদের দলভুক্ত।" অতঃপর আমি তাঁর আহবানে সাড়া দিলাম এবং তাঁকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিলাম। আমি এমনি ভাবে বিশ্ববাসীদেরকে মুক্তি দিয়ে থাকি।" {সূরা আম্বিয়াঃ ৮৭}
জাবের রাঃ থেকে বর্ণিত, রাসূল সাঃ হামদ ও সালাতের পর বলেন, "নিশ্চয়ই সর্বশ্রেষ্ঠ বাণী হল, আল্লাহর কিতাব এবং সর্ব শ্রেষ্ঠ হেদায়েত (পথনির্দেশ) হল, মুহাম্মদের হেদায়েত (পথনির্দেশ)। আর নিকৃষ্টতম কাজ হল, দ্বীনের মধ্যে নতুন সৃষ্টি এবং প্রত্যেক নতুন সৃষ্টিই হল ভ্রষ্টতা।" {মুসলিম, মিশকাতঃ ১৪১}
দোয়া ইউনুস বাংলা অর্থসহ - দোয়া ইউনুস উচ্চারণ
আমরা যারা আরবি পড়তে পারি না সাধারণত তারা দোয়া ইউনুস বাংলা অর্থসহ পড়ে মুখস্ত করে থাকি। যেহেতু এটি পড়লে আল্লাহ তা'আলা বিপদ আপদ থেকে আমাদের রক্ষা করে। তাই দোয়া ইউনুস উচ্চারণ সঠিকভাবে করতে হবে। তার জন্য আমাদেরকে দোয়া ইউনুস বাংলা অর্থসহ এবং দোয়া ইউনুস উচ্চারণ জানতে হবে।
দোয়া ইউনুস আরবিঃ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ ، إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
বাংলা উচ্চারণঃ লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহা নাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জ- লিমিন।
বাংলা অর্থঃ তুমি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, তুমি পবিত্র সুমহান। আমি নিশ্চয়ই জালিমদের দলভুক্ত।
দোয়া ইউনুস পড়ার ফজিলত
দোয়া ইউনুস পড়ার ফজিলত সম্পর্কে জানলে আপনি অবশ্যই এই দোয়াটি সবসময় আমল করবেন। হযরত ইউনুস আঃ যখন মাছের পেটে চলে গিয়েছিলেন তখন এই দোয়াটি আমল করেছিলেন তখন আল্লাহ তায়ালা তার আহবানে সাড়া দিয়েছিলেন। দোয়া ইউনুস এর মধ্যে রয়েছে আল্লাহ তায়ালার তাওহীদের স্পষ্ট ঘোষণা। তাই দোয়া ইউনুস পড়ার ফজিলত অনেক বেশি।
আল্লাহ তায়ালার পবিত্রতা ঘোষণা এবং নিজের অপরাধের স্বীকারোক্তি যে কারণে এটা এত মহত্ত্বপূর্ণ হয়েছে। আল্লাহর নবী হযরত ইউনুস আঃ এর দোয়া পাঠ করেই আল্লাহর রহমত থেকে মাছের পেট থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। যদি কেউ দোয়া ইউনুস কয়েকবার পাঠ করে তাহলে তার দোয়া কবুল হবে। বিশেষ করে সেই ব্যক্তি যদি বিপদাপদের মধ্যে থাকে তাহলে বিপদ থেকে উদ্ধার পাই।
আরো পড়ুনঃ আলহামদুলিল্লাহ শব্দের অর্থ কি? এর প্রতিউত্তরে কি বলতে হয়?
অনেক আলেমগণ বলে থাকেন সিজদায় গিয়ে ৪০ বার দোয়া ইউনুস পাঠ করে দোয়া করলে আল্লাহ তা'আলা তা কবুল করেন। দৈনিক ১০০০ বার যদি দোয়া ইউনুস পাঠ করা যায় তাহলে যে কোন কাজে পদমর্যাদা বৃদ্ধি পায় রুজি রোজগার বৃদ্ধি পায় এবং বিভিন্ন রকম পেরেশানি ও দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যায়। তাই আমরা প্রতিদিন এই আমলটি করার চেষ্টা করব।
খতমে ইউনুস পড়ার নিয়ম - খতমে ইউনুস কতবার পড়তে হয়ঃ শেষ কথা
খতমে ইউনুস পড়ার নিয়ম, খতমে ইউনুস কতবার পড়তে হয়? খতমে ইউনুস পড়ার ফজিলত, দোয়া ইউনুস বাংলা অর্থসহ, দোয়া ইউনুস উচ্চারণ, দোয়া ইউনুস খতমের দলিল, দোয়া ইউনুস কতবার পড়তে হয়? বড় খতমের দোয়া পড়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি এই বিষয়টি সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে অবশ্যই বিস্তারিত জেনে নিন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে থাকুন। ১৬৮৩০
বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url