চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঘরোয়া উপায়

গ্যাসটিকের সমস্যা আমদের কম বেশি সবার মাঝে আছেই, কারোর কম আবার কারোর বেশি সমস্যা হয়ে থাকে। আপনি যদি চিরতরে গ্যাসটিকের সমস্যা দূর করতে চান তাহলে সঠিক পোস্ট পড়তে এসেছেন।

আজ আমরা জানবো গ্যাস্ট্রিক কেনো হয় এবং চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঘরোয়া  উপায় সম্পর্কে। তাহলে চলুন শুরুকরা যাক।

পোস্ট সূচীপত্রঃ চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঘরোয়া  উপায়

কি কারণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বলতে আমরা বুঝি কোনো খাবার খাওয়ার আগে বা পরে বুকে জ্বালাপোড়া পেটে ব্যথা বা শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা হয়। মূলত গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয় বাইরের খাবারের জন্য, বাইরের খাবার পোড়া তেল বা নষ্ট তেল জাতীয় খাবার তৈরি করে, যার জন্য গ্যাস্টিকের সমস্যা হয়ে থাকে। পেড়া তেল বা নষ্ট তেল আমাদের শরীরে নানা ধরনের ক্ষতি করে।

অনেকেই আছে যাদের তেল জাতীয় খাবার খেলে পেটে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয়। তবে এর জন্য করণীয় হলো তেল জাথীয় খাবারের পরে অন্তত ১০-১৫ মিনিট পরে পানি পান করা, এতে করে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেকটা কমে যাবে। আপনাকে অশ্ব্যই পোড়া তেল বা নষ্ট তেল জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে।

চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঘরোয়া  উপায়

চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করতে হলে আপনাকে অশ্ব্যই নিয়ম অনুযয়ী তেল জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না। কেননা বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গ্যাস্ট্রিকের সমসা হয়ে থাকে শুধু তেল জাতীয় খাবারের জন্য। আপনার সুবিধার্তে চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঘরোয়া  উপায় সম্পর্কে নিচে তুলে দরা হলো;

বেশি বেশি পানি খাওয়া

বিজ্ঞানিদের মতে  আমাদের শরীরে ৭০-৮০% হলো পানি। কিন্তু আমরা পানি খুবই সল্প পরিমান পান করি। বিজ্ঞানিদের মতে আমাদের প্রতিদিন ৫-৬ লিটার পানি পান করা খুবই জরুরি। আমাদের পেটে নানা ধরনের খাবার থাকে যখন আমরা অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করি কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমান পানি না খাওয়ার কারনে আমাদের পেটে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয়। যাইহোক আমাদের প্রতিদিন ৬-৭ লিটার পানি পান করা খুবই প্রয়োজন।

প্রোবায়োটিক গ্রহণ করুন

প্রোবায়োটিক গ্যাস কমাতে এবং অতিরিক্ত গ্যাস থেকে পেটের অস্বস্তি দূর করতে সাহায্য করতে পারে। যদিও সব প্রোবায়োটিক সমান তৈরি হয় না। স্টলার বলেছেন, "এতে অনেক ধরণের প্রোবায়োটিক রয়েছে যে সঠিক ব্যক্তির জন্য সঠিক পণ্যটি সনাক্ত করা কঠিন হতে পারে।" যাইহোক, গবেষণা ইঙ্গিত দেয় যে স্ট্রেন বিফিডোব্যাকটেরিয়াম দরকারী হতে পারে। 

আরো পড়ুনঃ চেহারা ভরাট করার উপায়

২০২০ সালের একটি ছোট গবেষণায়, অংশগ্রহণকারীরা প্রথম তিন দিনের জন্য গ্যাস প্ররোচিত করার জন্য একটি উচ্চ ফাইবার খাদ্য গ্রহণ করেছিল। তারপরে পরবর্তী ২৮ দিনের জন্য, তারা তাদের নিয়মিত খাদ্যের সাথে প্রতিদিন দুবার বিফিডোব্যাকটেরিয়াম অ্যানিলিস ধারণকারী প্রোবায়োটিক দুধের পণ্যের আধা কাপ যোগ করে। তারপর তারা গবেষণা শেষে তিন দিনের জন্য একই উচ্চ ফাইবার খাদ্য গ্রহণ করে।

ফলাফলগুলি দেখায় যে প্রোবায়োটিক খাবারের চার সপ্তাহ পরে, অংশগ্রহণকারীদের উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবারের প্রতি অনেক কম তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, তারা কম ফোলা অনুভব করে এবং দিনে কমবার গ্যাস পাস করে। স্টেলার সম্মত হন যে যারা অতিরিক্ত গ্যাস থেকে ত্রাণ চান তাদের জন্য, বিফিডোব্যাকটেরিয়াম ধারণকারী প্রোবায়োটিকগুলি সবচেয়ে কার্যকর হতে পারে।

ভেষজ চা খাওয়া

এক কাপ গরম চায়ে চুমুক দিলে তা আপনার গ্যাস-সম্পর্কিত পেটের ব্যথা উপশম করতে পারে। এই ভেষজগুলি গ্যাস ত্রাণের সাথে সবচেয়ে বেশি যুক্ত:

পেপারমিন্ট: আপনি যেমন পেপারমিন্ট এসেনশিয়াল অয়েলের সাথে পরিপূরক করতে পারেন, তেমনি আপনি পাতা থেকে চা তৈরি করেও উপকার পেতে পারেন। পেপারমিন্ট চায়ে চুমুক দিলে তা হজমশক্তির উন্নতি ঘটাতে পারে এবং পেশী শিথিল করতে পারে যাতে গ্যাস যেতে পারে।

আদা: এই রাইজোমটি পেট এবং অন্ত্রের মধ্যে হজম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে পাওয়া গেছে, যা গ্যাস, ফোলাভাব এবং ফলস্বরূপ পেটের চাপ উপশম করতে সহায়তা করতে পারে। এটি বমি বমি ভাব শান্ত করতেও সাহায্য করতে পারে, যা কেউ কেউ গ্যাসের সাথে অনুভব করতে পারে।

ক্যামোমাইল: একটি 2010 পর্যালোচনা অনুসারে, এই শান্ত উদ্ভিদটি হজমের পেশীগুলিকে শিথিল করতে এবং বেদনাদায়ক গ্যাস দূর করতে সহায়তা করতে সক্ষম হতে পারে।

লেবু বালাম: পুদিনা পরিবারের এই ভেষজটির প্রদাহ-বিরোধী এবং অ্যান্টিস্পাসমোডিক প্রভাব রয়েছে এবং এটি গ্যাস এবং পেটের ব্যথার চিকিত্সার জন্য একটি সাধারণ ভেষজ প্রতিকার - যদিও পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণের অভাব রয়েছে।

লবঙ্গ খাওয়া 

লবঙ্গ, যা ঐতিহ্যগতভাবে দাঁতের ব্যথা উপশম করতে ব্যবহার করা হয়েছে, এতে কারমিনেটিভ প্রভাব রয়েছে বলে জানা গেছে, যার মানে এটি গ্যাস উপশম করতে সাহায্য করতে পারে। যাইহোক, এই বিশেষ ব্যবহারের চারপাশে গবেষণা বিরল।

২০১৯ সালের একটি গবেষণা নিবন্ধ অনুসারে, লবঙ্গ অপরিহার্য তেলের কিছু প্রধান যৌগ - ইউজেনল, β-ক্যারিওফাইলিন এবং ইউজেনল অ্যাসিটেট সহ - সম্ভাব্যভাবে পেট ফাঁপা, পেট ব্যথা এবং বমিভাব কমাতে পারে।

উচ্চ মাত্রায় লবঙ্গ অপরিহার্য তেল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় না, তবে আপনি কয়েকটি পুরো লবঙ্গ চিবিয়ে খেতে পারেন, সেগুলি দিয়ে চা তৈরি করতে পারেন বা আপনার রান্নায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।

কালো মরিচ এবং জিরা বীজ সঙ্গে রসুন

গ্যাসের সমস্যা সমাধানে রসুন আরেকটি বিকল্প। এটি নিরাময় সম্পত্তি ধারণ করে এবং সঠিক হজমে সাহায্য করে। গ্যাসের গঠন কমাতে আপনার খাবার এবং স্যুপে রসুন যোগ করুন।

ব্যবহারের নিয়ম: এক কাপ পানি নিয়ে ফুটিয়ে নিন। এবার রসুনের কয়েক কোয়া নিয়ে পিষে নিন। জলের মধ্যে রসুন যোগ করুন। কয়েকটি কালো গোলমরিচ এবং জিরা যোগ করুন। কয়েক মিনিটের জন্য ফুটতে দিন এবং তারপর আগুন থেকে নামিয়ে নিন। পানীয়টি ছেঁকে ঠান্ডা হতে দিন। দিনে তিনবার এই পান করুন।

বাটারমিল্ক

বাটার মিল্ক পেট ফাঁপা এবং এটি আপনার পেটকে শান্ত করবে। এটি একটি কর্যকারি টিপস।

ব্যবহারের নিয়ম: এক গ্লাস বাটারমিল্ক নিন এবং তাতে এক চিমটি কালো নুন ও ক্যারাম বীজ যোগ করুন। এটি ভালো করে মিশিয়ে দিনে একবার বা দুবার পান করলে গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

আদা খাওয়া

আদা আমাদের শরীরে জন্য খুবিই ইপকারি আপনার যদি আদা খাওয়ার অভ্যাস না থাকে তাহলে চা সঙ্গে খেয়ে অভস্ত হন। চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঘরোয়া  উপায় মধ্যে আদ কিন্তু খুবিই কার্যকারি।

আরো পড়ুনঃ শিশুদের পেটেব্যথার কারণ ও করণীয়

ব্যবহারের নিয়: আদা কুচি কুচি করে কাঁটুন এবং পানির মধ্যে মিশিয়ে, তারপর পানি ফুটান। পানি ফুটানো হলে তা ৮-১০ মিনিটের মতো নামিয়ে রাখুন এবং দিনে ২/৩ বার চায়ের মতো পান করুন। আপনি চাইলে এটির সঙ্গে মধু মিশাতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url