আয়কর রিটার্ন কি - আয়কর রিটার্ন দাখিলের নিয়ম
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্ধারিত ফরমে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হয়। করদাতার বার্ষিক আয়, ব্যয়, সম্পদের তথ্য নির্ধারিত ফরমের মাধ্যমে উপস্থাপন করাকেই আয়কর রিটার্ন বলা হয়ে থাকে। বিশেষ করে যাদের টেক্স আইটেমটিফিকেশন নাম্বার ও টিআইএন রয়েছে তাদের অবশ্যই আয়কর রিটার্ন নিতে হবে। আয়কর রিটার্ন হচ্ছে সরকার নির্ধারিত একটি ফর্মে তার আয়, ব্যয়, সম্পদ, ও দায়ের সকল তথ্য লিখে কার্যালয়ে জমা দিবেন।
আয়কর রিটার্ন |
ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের করদাতাদের জন্য এই ক্ষেত্রে আলাদা রিটার্ন জমা দিতে হয়। আজকের পোস্টে আয়কর রিটার্ন দাখিলের নিয়ম, আয়কর রিটার্ন ফরম পূরণের নিয়ম ও আয়কর রিটার্ন কত টাকা এই নিয়ে মূল্যবান কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাকঃ
আয়কর রিটার্ন দাখিলের নিয়ম ২০২৩-২০২৪?
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার পাশাপাশি ঘরে বসেই সনদ ও আয়কর রিটার্ন কপি সংগ্রহ করে ফেলা যায়। অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য আপনাদেরকে সর্বপ্রথম https://etaxnbr.gov.bd/#/landing-page এই ওয়েবসাইটটিতে চলে যেতে হবে। তারপরে ই রিটার্ন অপশন নির্বাচন করে নিজের ফোন নাম্বার দিয়ে নিবন্ধন করে নিতে হবে।
তারপরে নাম্বারটি যাচাই করার জন্য আপনার মোবাইলে ছয় অক্ষরের একটি ওটিপি কোড যাবে। কোডটি বসিয়ে অ্যাকাউন্টের জন্য একটি পাসওয়ার্ড দিতে হবে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই পাসওয়ার্ডটি খুবই শক্তিশালী দিতে হবে। পাসওয়ার্ড দেওয়ার পর আপনার আয়কর রিটার্ন অ্যাকাউন্টটি তৈরি হয়ে যাবে।
নিবন্ধন করা হয়ে গেলে এবার আপনাদেরকে সাইন ইন করতে হবে। বিশেষ করে যাদের করযোগ্য আয় নেই বা জিরোট্যাক্স তারা প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই আয়কর রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। আর যাদের করযোগ্য আয় রয়েছে তাদের কর দিতে হবে।
এটার জন্য আপনাদেরকে ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই জেনে নিতে হবে রেয়াতের পরিমাণ,রিটার্নের সঙ্গে কত টাকা জমা দিতে হবে ইত্যাদি। এই বিষয়ে যদি বুঝে না থাকেন তাহলে নিম্নে দেওয়া ভিডিওটি দেখে আইকন রিটার্ন দাখিল করতে পারেন।
আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সুবিধা?
কোন ব্যক্তি যদি নির্দিষ্ট সময় পরও আয়কর না দিয়ে থাকে তাহলে জরিফ আনার মুখে পড়তে হবে। জমি নিবন্ধন থেকে শুরু করে ইউটিলিটি সংযোগ, ক্রেডিট কার্ড সহ ৩৮টি সেবা পেতে অবশ্যই আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক।
বিশেষ করে যাদের টিআইএন নাম্বার আছে তাদের অবশ্যই আইকর রিটার্ন জমা দিতে হবে। কেননা আয়কর রিটার্ন জমা না দেওয়া গেলে পরবর্তীতে জরিমানার মুখে পড়লে অনেক টাকা খরচ হয়ে যেতে পারে।
আয়কর রিটার্ন দাখিল না করলে কি হয়?
আয়কর রিটার্ন যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাখিল করা না হয় তাহলে জরিমানা করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত সরল সুদ ও বিলম্ব সুদ আরোপ করে থাকে এনবিআর। আর সময় বাড়ানোর অনুমোদন থাকলে শুধু জরিমানা দিতে হবে না, কিন্তু অতিরিক্ত সরল সুদ ও বিলম্ব সুদ প্রদান করতে হবে।
আয়কর রিটার্ন ফরম পূরণের নিয়ম | আয়কর রিটার্ন ফরম পূরণের নমুনা
আয়কর রিটার্ন ফরম পূরণের নিয়ম অনেকেই জানেন না। যার কারণে অনেকেই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। যারা আয়কর রিটার্ন ফরম পূরণ করতে চান কিন্তু পদ্ধতি সম্পর্কে জানেন না তারা নিম্নে দেওয়া ভিডিওটি দেখে খুব সহজেই আইকট রিটার্ন ফরম পূরণ করতে পারেন। ভিডিওতে খুবই সহজভাবে আইকড রিটার্ন ফরম পূরণ করার নিয়ম দেখানো হয়েছে।
আয়কর রিটার্ন ফরম ডাউনলোড?
আয়কর রিটার্ন ফরম যারা ডাউনলোড করতে চান তারা চাইলে সরাসরি আয়কর রিটার্ন ফর্ম এই লিংকটিতে গিয়ে উপরের দিকে যে ফর্ম অপশন রয়েছে সেখান থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারেন। এই ওয়েবসাইটটি একটি সরকারি ওয়েবসাইট। এখান থেকে যে কোন ব্যক্তি চাইলে খুব সহজেই আয়কর রিটার্ন ফর্ম ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
আয়কর রিটার্ন কত টাকা?
অনেকেই আয়কর রিটার্ন কত টাকা বা আয়কর রিটার্ন কত টাকা দিতে হয় এই বিষয়ে প্রশ্ন করে থাকেন। প্রথম তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা আয়ের কোন আয়কর প্রদান করতে হয় না। তারপরে পরবর্তী এক লক্ষ টাকার উপর পাঁচ শতাংশ, পরবর্তী তিন লক্ষ টাকা আয়ের উপর আয়কর ১০ শতাংশ, পরবর্তী চার লক্ষ টাকা আয়ের উপর ১৫ শতাংশ।
পরবর্তী পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের ২০ শতাংশ, ও অবশিষ্ট মোট আয়ের ২৫ শতাংশ আয়কর রিটার্ন প্রদান করতে হবে। তাছাড়া কোন ব্যক্তির মাসিক ইনকাম যদি ২৫ হাজার টাকার উপরে হয়ে থাকে তাকে অবশ্যই আয়কর প্রদান করতে হবে।
শেষ কথা, আশা করি আজকের পোস্টটি যারা ইতিমধ্যে পড়েছেন তারা আয়কর রিটার্ন দাখিলের নিয়ম ও আয়কর রিটার্ন ফরম পূরনের নিয়ম সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা পেয়ে গিয়েছেন।
তারপরেও যদি এই বিষয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন থাকে বা পোস্টটি পড়ে কোন কিছু বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।
বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url