হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড
জাতীয় পরিচয় পত্র আমাদের কাছে খুবই মূল্যবান একটি ডকুমেন্ট। নাগরিক সেবা-সহ বিভিন্ন কাজে জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজন হয়ে থাকে। অনেকের অজ্ঞাতবশত কারণে তাদের ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে যায়। অনলাইনে Nid রিইস্যু আবেদন করে খুব সহজেই হারানো ভোটার আইডি কার্ড আবার অনলাইনের মাধ্যমে ডাউনলোড করা সম্ভব।
হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড |
তবে এনআইডি আবার পুনরায় ডাউনলোড করার জন্য এনআইডি রিইস্যু ফি প্রদান করতে হয়। অর্থাৎ ইতিমধ্যে বুঝে গিয়েছেন যে আপনার এনআইডি কার্ড যদি হারিয়ে যায় বা চুরি হয়ে যায় বা কোন কারণে নষ্ট হয়ে যায় তাহলেও এখন অনলাইনের মাধ্যমে সামান্য কিছু টাকা সি প্রদান করে আবার আইডি কার্ড ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
তবে যারা ২০১৯ সালের পরে যারা ভোটার হয়েছেন তারা তাদের এনআইডি কার্ড সম্পন্ন ফ্রিতে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন অনলাইন এর মাধ্যমে। যাদের এনআইডি কার্ড হারিয়ে গিয়েছে তারা রিইস্যু আবেদন করার আগে আপনাদেরকে সর্বপ্রথম থানায় একটি জিডি করতে হবে।
জিডিতে উল্লেখ করা থাকবে আপনার আইডি কার্ডটি কিভাবে হারিয়েছেন, কোথায় হারিয়েছেন। হারানো আইডি কার্ডের জিডি লেখার নিয়ম যারা জানেন না তারা নিম্নে দেওয়া নিয়মটি অনুসারে লিখতে পারেন।
হারানো ভোটার আইডি জিডি লেখার নিয়ম?
জাতীয় পরিচয় পত্র হারিয়ে গেলে আপনাদেরকে অবশ্যই একটি সাধারণ ডায়েরি করতে হবে। সাধারণ ডায়েরিটি নিকটস্থ থানায় করতে হবে। সাধারণ ডায়েরি বা জিডির মধ্যে ব্যক্তির নাম, বয়স, পিতা মাতার নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করে ফেলতে হবে।তাছাড়া আপনার এনআইডি কার্ড কোথায় হারিয়েছে অর্থাৎ হারানো এনআইডি কার্ডের নাম্বার এবং হারানো স্থানের বর্ণনা জিডিতে উল্লেখ করতে হবে। তাছাড়া আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র টি কবে কোথায় কিভাবে হারালো তার কিছুটা তাদেরকে জানাতে হবে।
জিডিতে অবশ্যই ব্যক্তির স্বাক্ষর, ও মোবাইল নাম্বার দিয়ে জিডিটি সম্পূর্ণ করতে হবে। নিম্নে জিডি কিভাবে লিখতে হয় ছবির মাধ্যমে দেখতে পাচ্ছেন। জিডি লেখা হয়ে গেলে থানায় এক কপি দিতে হবে এবং এক কপি সংগ্রহ করে স্ক্যান করে png অথবা pdf ফরম্যাটে সংরক্ষণ করতে হবে।
জিডিতে অবশ্যই ব্যক্তির স্বাক্ষর, ও মোবাইল নাম্বার দিয়ে জিডিটি সম্পূর্ণ করতে হবে। নিম্নে জিডি কিভাবে লিখতে হয় ছবির মাধ্যমে দেখতে পাচ্ছেন। জিডি লেখা হয়ে গেলে থানায় এক কপি দিতে হবে এবং এক কপি সংগ্রহ করে স্ক্যান করে png অথবা pdf ফরম্যাটে সংরক্ষণ করতে হবে।
তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই ফাইল সাইজ ১০০ কেবির নিচে থাকতে হবে না হলে নিবে না। ইতিমধ্যে থানায় জিডি করে ফেলেছেন এবং জিডি কপি স্ক্যান করে প্রস্তুতি গ্রহণ করে ফেলেছেন এবার শুধুমাত্র এন আই ডি কার্ড রিইস্যু আবেদন করতে হবে অনলাইনের মাধ্যমে।
হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম?
হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/claim-account ভিজিট করে ব্যক্তির এন আই ডি নাম্বার, জন্ম তারিখ ও সিকিউরিটি ক্যাপচা পূরণ করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে ফেলতে হবে।রেজিস্ট্রেশন করা হয়ে গেলে ড্যাশবোর্ড থেকে রিইস্যু অপশনে চলে যেতে হবে। তারপরে রিইস্যুর ধরন, জিডি নাম্বার, রিইস্যু ফি সহ প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে আবেদন করতে হবে। আপনার আবেদনটি যদি অনুমোদিত হয়ে থাকে তাহলে ডাউনলোড অপশন থেকে খুব সহজেই হারানো ভোটার আইডি কার্ডটি ডাউনলোড করে নেওয়া যাবে।
এর আগে আপনাদের কিছু কাজ করতে হবে এই কাজগুলো অবশ্যই করা বাধ্যতামূলক।হারানো আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে হলে থানায় জিডি করতে হবে ও একটি নমুনা জিডি কপি দেওয়া হবে।
ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে প্রথমে কি করতে হবে?
Nid card হারিয়ে গেলে আপনাদেরকে সর্বপ্রথম কিছু কাজ করতে হবে। এই কাজগুলো না করলে অনলাইনের মাধ্যমে কোনভাবেই এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন না। জাতীয় পরিচয় পত্র হারিয়ে গেলে সর্বপ্রথম যে এলাকায় আপনার এনআইডি কার্ডটি হারিয়েছে সেখানে একটি সাধারণ ডায়েরি বা জিডি করতে হবে। কারো যদি এনআইডি কার্ড চুরি হয়ে যায় সে ক্ষেত্রেও থানায় জিডি করতে হবে।ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে জিডি করার সময় অবশ্যই আপনাদেরকে জিডির দুইটি ফটোকপি করে নিতে হবে। দাখিল করা জিডির এক কপি থানায় রেখে দিবেন আর এক কপি নিজের সাথে করে নিয়ে আসতে হবে। তাছাড়া থানায় জিডি করার সময় কিছু তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। যেমনঃ
- জেনারেল ডায়েরি নাম্বার লাগবে।
- জিডি গ্রহণকারী পুলিশ কর্মকর্তার নাম প্রয়োজন হবে।
- পুলিশ কর্মকর্তার পদবী লাগবে।
- জিডি করার তারিখ লাগবে।
- জিডি কপিতে অবশ্যই ছিল এবং স্বাক্ষর লাগবে।
হারানো এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করার পদ্ধতি?
হারানো এনআইডি কার্ড রিইস্যু করার জন্য আপনাদেরকে কয়েকটি বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।যেমনঃ- nid account রেজিস্ট্রেশন করতে হবে
- এন আই ডি নাম্বার ও জন্ম তারিখ দিতে হবে
- ঠিকানা যাচাই করা লাগবে।
- ফেইস ভেরিফিকেশন লাগবে।
- মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন করা লাগবে।
- রিইস্যু ফরম পূরণ করতে হবে।
- ডকুমেন্টস আপলোড করতে হবে।
ধাপ ১ঃ
প্রথমে আপনাদেরকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/ এই লিংকটিতে চলে গিয়ে রেজিস্টার বাটনে ক্লিক করতে হবে। রেজিস্টার বাটনে ক্লিক করা হয়ে গেলে আপনাকে নতুন আরেকটি পেজে নিয়ে যাওয়া হবে।
ধাপ ২ঃ
এই ওয়েবসাইটে যদি আগে থেকে একাউন্ট করা থাকে তাহলে ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করা যাবে। আর যদি নতুন ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন তাহলে জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার বা ভোটার নিবন্ধন স্লিপ নাম্বার, জন্ম তারিখ ও ক্যাপচা পূরণ করে খালি ঘর পূরণ করতে হবে।
জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার নিবন্ধন স্লিপ নাম্বার দেওয়া হয়ে গেলে জন্ম তারিখ যথাক্রমে দিন,মাস ও বছর বসাতে হবে। তারপরে আপনাদেরকে সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ ৩ঃ
তারপরে ঠিকানা যাচাই করার অপশন চলে আসবে। ঠিকানা যাচাই করার জন্য ড্রপডাউন মেনু থেকে বিভাগ জেলা ও উপজেলা যথাক্রমে নির্বাচন করতে হবে। বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা এখানে নির্বাচন করা লাগবে। বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা ভিন্ন হলে অবশ্যই আলাদা আলাদা করে লিখতে হবে।
ধাপ ৪ঃ
সবকিছু দেওয়া হয়ে গেলে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করে আপনাদেরকে এবার মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন করতে বলবে। ভোটার হওয়ার সময় যে মোবাইল নাম্বারটি দিয়েছিলেন সেই মোবাইল নাম্বারটির শেষের কিছু সংখ্যা এখানে দেখতে পারবেন।
মোবাইল নাম্বারটিতে বার্তা পাঠান অপশনে ক্লিক করে বার্তা পাঠাতে হবে এবং ছয় সংখ্যার একটি কোড মোবাইলে আসলে সেটা দিয়ে সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে। যদি কোন কারনে কোডটি না এসে থাকে তাহলে পুনরায় ৬০ সেকেন্ড পর আবার কোডটি পাঠাতে পারবেন। তাছাড়া কেউ যদি মোবাইল নাম্বারটি পরিবর্তন করতে চান তাহলে নতুন একটি সচল নাম্বার যুক্ত করার জন্য পরিবর্তন করতে পারেন।
ধাপ ৫ঃ
এবার আপনাদেরকে ফেস ভেরিফিকেশন করতে বলবে। ফেইস ভেরিফিকেশন অবশ্যই যার আইডি কার্ড তাকেই করা লাগবে। তাই অবশ্যই এই বিষয়টার উপরে আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে। ফেইস ভেরিফিকেশন করার জন্য আপনাদেরকে স্মার্ট কার্ডে Nid wallet আ্যপটি প্লে স্টোর থেকে নামিয়ে নিতে হবে।
তারপরে আপনাদের ফেস ভেরিফিকেশন সহ যাবতীয় বিষয়গুলো ভালোভাবে অনুসরণ করে এন আই ডি ওয়ালেট অ্যাপের কিউআর কোড স্ক্যান করতে হবে। তবে ফেস ভেরিফিকেশন করার জন্য অবশ্যই ক্যামেরার সামনে মুখ দিতে হবে ও একবার ডানদিকে ও বামদিকে মাথা ঘুরিয়ে ফেস ভেরিফিকেশন থেকে সম্পূর্ণ করতে হবে।
ধাপ ৬ঃ
তারপরে এনআইডি কার্ড রিইস্যু আবেদন করার জন্য ড্যাশবোর্ড থেকে রিইস্যু মেনুতে ট্যাব করতে হবে। উপরের ধাপ গুলো অনুসরণ করার জন্য আপনাদেরকে অবশ্যই ইউজার প্রোফাইল বা ড্যাসবোর্ডে আসতে হবে।
রিইস্যু অপশনে চলে আসলে আপনাদেরকে এডিট বাটনে ক্লিক করতে হবে। তারপরে আপনারা নিচের ছবির মত Nid Reissue ফর্মটি দেখতে পাবেন। এবার আপনাদেরকে পূর্ণ মুদ্রণ কারণ, জিডি নাম্বার, থানার নাম,যে পুলিশ অফিসারের নিকট জিডি করেছেন তার নাম ও পদবী দিতে হবে।
অর্থাৎ জিডি কপি অনুসারে এখানে আপনাদেরকে সবকিছু উল্লেখ করে দিতে হবে। সবশেষে জিডি দাখিলের তারিখটি লিখে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ ৭ঃ
এবার আপনাদেরকে এন আই ডি কার্ড রিইস্যু করার জন্য ফি প্রদান করতে হবে। প্রথমবার যারা এনআইডি কার্ড রিইসু আবেদন করছেন তাদেরকে অবশ্যই ২৩০ টাকা ফি প্রদান করা লাগবে।
বিকাশ, নগদ, রকেট বা অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা গুলোর মাধ্যমে এখান থেকে আপনারা ফি প্রদান করতে পারবেন। আপনারা চাইলে বিকাশের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয় পত্র রিইস্যু আবেদনের ফি পরিশোধ করতে পারেন।
ধাপ ৮ঃ
ফি প্রদান করা শেষ হয়ে গেলে জিডির ফটোকপি যেটি স্ক্যান করা হয়েছিল সেটি কম্পিউটারে জিডি কপিটি Pdf অথবা Png ফরমেটে ১০০ কিলোবাইটের নিচে সেভ করে নিতে হবে। ফাইল সাইজ যদি ১০০ কেবির বেশি হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই সেটি রিসাইজ করে কমিয়ে নিতে হবে না হলে আপলোড করা যাবে না।
তারপরে আপনাদেরকে ডকুমেন্ট আপলোড করে দিতে হবে। ডকুমেন্ট আপলোড করা হয়ে গেলে Nid card reissue একটি সামারি আপনাদের সামনে চলে আসবে। এখানে আপনারা রিইস্যুর ধরন ও আপলোড করা ডকুমেন্টের সকল তথ্য দেখতে পারবেন।
সব কিছু যদি ঠিকঠাক দেখে থাকেন তাহলে সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে। সাবমিট করা হয়ে গেলে এটি অনুমোদনের জন্য পেন্ডিং-এ চলে যাবে। আবেদন করার দুই থেকে সাত দিনের মধ্যে এটি এপ্রুভ হয়ে যায়। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে এর থেকে বেশি সময় লাগতে পারে।
জাতীয় পরিচয় পত্র ইস্যু আবেদন করা সম্পূর্ণ হলে কিছুদিন পর আপনি যে মোবাইল নাম্বারটি দিয়েছিলেন সেখানে ১০৫ নাম্বার থেকে একটি মেসেজ আসবে। মেসেজের মাধ্যমে লেখা থাকবে আপনার সর্বশেষ রিইস্যু আবেদন অনুমোদিত করা হয়েছে।
জাতীয় পরিচয় পত্র ইস্যু আবেদন করা সম্পূর্ণ হলে কিছুদিন পর আপনি যে মোবাইল নাম্বারটি দিয়েছিলেন সেখানে ১০৫ নাম্বার থেকে একটি মেসেজ আসবে। মেসেজের মাধ্যমে লেখা থাকবে আপনার সর্বশেষ রিইস্যু আবেদন অনুমোদিত করা হয়েছে।
এখন আপনারা চাইলে সরাসরি উপজেলা নির্বাচন কমিশনের অফিস থেকে অথবা অনলাইনের মাধ্যমে হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে হোম মেনুতে প্রবেশ করতে হবে তারপরে ছবি ও জাতীয় পরিচয় পত্রের কিছু তথ্য দেওয়ার পর নিচের দিকে ডাউনলোড নামক বাটন দেখতে পাবেন।
এখান থেকে আপনারা Nid card download করে নিতে পারবেন খুব সহজে ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে। ডাউনলোড করা হয়ে গেলে এটা আপনারা প্রিন্ট করে লেমনেটিং করে নিলে একদম অরজিনাল আইডি কার্ডের মত ব্যবহার করতে পারবেন।
বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url