মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করার উপায়

এই আটিকেলে আমি বিভিন্ন পেশার কথা উল্লেখ করেছি, যা নির্দিষ্ট জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা থাকলেই মাসিক গড়ে ২০,০০০ টাকা ইনকাম করা সম্ভব। 
মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করার উপায়
মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করার উপায়
তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক। ২০২৪ এর সেরা ২০টি টাকা ইনকাম করার উপায়। যেমনঃ

১. ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট

ডিজিটাল মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ হতে গেলে আপনার কোন বিশেষ প্রযুক্তিগত ডিগ্রির দরকার নেই। শুধু জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং সৃজনশীলতাই এই পেশার জন্য যথেষ্ট। যেকোন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে পরিষেবা কিংবা পণ্যের সঠিক প্রচারের জন্য ডিজিটাল বিপণন বিশেষজ্ঞকে হায়ার করা হয়ে থাকে। 

আর একজন ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্টকে সারাক্ষণ বিজ্ঞাপনের কার্যকারিতা সম্পর্কে বিশেষ খেয়াল রাখতে হয়। সেই কারণেই এখানে ইনকামের পরিমাণ অন্য যেকোন অনলাইন কাজের তুলনায় অনেকটাই বেশি।

২. ট্রান্সলেশন পরিষেবা

আপনার যদি কোন আঞ্চলিক কিংবা আন্তর্জাতিক ভাষার উপর চরম দক্ষতা অর্জন করে থাকেন। তাহলে, ইন্টারনেটের মাধ্যমেই আপনি ঘরে থেকে ট্রান্সলেশন বা অনুবাদ পরিষেবা প্রদান করে ভাল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারেন। 

এই কাজটিতে কোন রকম বিনিয়োগের প্রয়োজন হয় না। শুধুমাত্র ভাষাগত জ্ঞান ও সামান্য কম্পিউটার জ্ঞান থাকলেই কাজ হাসিল করা যায়।

৩. ব্লগিং

একটা কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থাকলেই ঘরে বসে আপনি ব্লগিং শুরু করতে পারবেন। এই পেশাতে সবথেকে বেশি প্রয়োজন হয় সৃজনশীল লিখনশৈলী ও ব্লগ পাবলিশ করার নূন্যতম জ্ঞানের। আপনি গুগলে একজন পার্ট-টাইম কিংবা ফুল-টাইম ব্লগার হিসেবেও কাজ করতে পারেন। 

ব্লগিং এর ব্যাপারে পারদর্শী হওয়ার জন্য কোন রকমের বিশেষ ক্যারিয়ারের প্রয়োজন নেই। দ্রুত ইন্টারনেট সংযোগ হল এই পেশার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। যেকোন বয়সের মানুষই নিয়মিত ব্লগ থেকে উপার্জন করতে সক্ষম।

৪. কনটেন্ট রাইটিং

বর্তমানে বিভিন্ন ডোমেইনে কনটেন্ট রাইটিং এর ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। প্রায় প্রতিটি কোম্পানি অথবা ফার্ম নিজেদের অনলাইন অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠার প্রতি অত্যন্ত যত্নশীল। আর নিজেদের অনলাইন অস্তিত্ব তৈরির প্রধান মাধ্যম হল নিজেদের কনটেন্ট বা বিষয়বস্তুকে ভালভাবে বর্ণনা করে মানুষের কাছে পরিবেশন করা। 

এই ভাল কনটেন্ট পাওয়ার জন্যেই এরা বিভিন্ন কনটেন্ট রাইটারদের দ্বারস্থ হয়ে থাকে। একজন ফ্রিল্যান্স কনটেন্ট রাইটার হতে গেলে যদিও দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার দরকার পড়ে। তবে লেখার শৈলী ভাল হলে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে যেকোন বয়স বা পেশার মানুষই কনটেন্ট রাইটিং থেকে ভাল পরিমাণ অর্থ ইনকাম করতে পারেন।

৫. ওয়েব ডিজানিং

ওয়েব ডিজানিং হচ্ছে ওয়েবপেজ লেআউট ও ডিসাইন করার এক ধরণের কাজ। এই কাজের জন্য প্রয়োজন হয়। ডিসাইন তৈরী করার প্রতি ন্যাক ও যথেষ্ট সৃজনশীলতা। 

এই ওয়েব ডিজানিং এর কাজ পার্ট-টাইম কিংবা ফুল-টাইম দুটোই হতে পারে। আপনি আপনার সুবিধা এবং পছন্দমতো ওয়েব ডিজানিং করে নিয়মিত মাসিক আয়ের উপায় করে তুলতে পারেন।

৬. এসইও এক্সপার্ট

এই ধরণের সেক্টরটি পুরোপুরিভাবেই প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রের মধ্যে পড়ে। তবে প্রযুক্তির ব্যাপারে শিখতে ও জানতে আগ্রহী যেকোন ব্যক্তিই সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশান শিখতে পারেন। এই সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশান (SEO) হল ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটা অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। 

একজন এসইও এক্সপার্টের দায়িত্ব থাকে এমন কীওয়ার্ড খোঁজা বা বার করা, যা একটি নির্দিষ্ট সার্চ ইঞ্জিনে কোম্পানি বা ক্লায়েন্টের ওয়েবসাইটের র‍্যাঙ্কিং বাড়াতে সাহায্য করবে। বর্তমানে এটি মাসিকভাবে উপার্জনের একটা ভাল অপশানে পরিণত হয়েছে।

৭. প্রোডাক্ট টেস্টিং জবস

মাসিকভাবে অনেক মার্কেট রিসার্চ কোম্পানিগুলো বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে থাকে। যেকোন পণ্য মার্কেটে লঞ্চ করার আগে, ব্যবহারকারীর দ্বারা পরীক্ষার প্রয়োজন হয়ে থাকে। আর এখানেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে একজন প্রোডাক্ট টেস্টার। 

একজন পণ্য পরীক্ষককে কোন নির্দিষ্ট পণ্য কিংবা পরিষেবাগুলোর ত্রুটিগুলো খুঁজে বের করে তার উন্নতির সুযোগ-সন্ধানের পথ বাতলে দিতে হয়। এই পেশাটি যেকোন শিক্ষার্থী ও প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের কাছে অর্থ উপার্জনের সুযোগ ও পণ্য বিকাশের জন্য একটা দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে আসতে পারে।

৮. ওয়েব ডেভেলপিং

যেকোন ওয়েবপেজের বিকাশ ও সঠিক উপস্থাপনার পিছনে থাকে। একজন ওয়েব ডেভেলপারের চরম ভূমিকা। একজন ওয়েব ডেভেলপার কোডিং ও প্রযুক্তিগত ত্রুটিগুলো শুধরানোর কাজ করে থাকেন। 

আর একজন ওয়েব ডেভেলপার হওয়ার জন্য আপনার মৌলিক প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের উপর ব্যাপক দক্ষতা থাকাটা খুবই জরুরি। এটি অর্থ উপার্জনের জন্য ঘরে বসেই একটা যথেষ্ট উৎপাদনশীল কাজের সুযোগ করে দেয়।

৯. ট্রাভেল রিভিউ

আপনি ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করলে, আপনি ট্রাভেল রিভিউয়ের মাধ্যমেও অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। আপনি কোন ওয়েবপেজ বা ট্রাভেল ব্লগ বা ভ্লগ শুরু করলে সেখান থেকেও অর্থ উপার্জন সম্ভব।

১০. সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এক্সপার্ট

যেহেতু এখনকার বহু মানুষরেই সোশ্যাল মিডিয়া উপস্থিতি রয়েছে। তাই এখনকার বিজ্ঞাপনগুলো মূলত সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই বেশি প্রচার করা হয়ে থাকে। একসাথে বহু-সংখ্যক জনগণের কাছে পৌঁছোনোর উদ্দেশ্যে। 

একজন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ হিসেবে আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়াতে সঠিক বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য সঠিক বিবরণগুলো অনুসন্ধান করে প্রাসঙ্গিক বিজ্ঞাপন পোস্ট করতে হবে। এই পেশাটি বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় ও অর্থ উপার্জনের একটা স্থির উপায় হয়ে দাড়িয়েছে।

১১. ভিডিও এডিটিং

ডিজিটাল বিশ্বের দৌলতে বহু কোম্পানি ও এজেন্সী তাদের প্রমোশন কিংবা প্রচারের জন্যে বহু সৃজনশীল ভিডিও বানিয়ে থাকে। তাই ভিডিও সম্পাদনা বা এডিটিং খুবই ভরসাযোগ্য ও চাহিদাজনক পেশা হতে পারে। 

আপনি যদি ভিডিও সম্পাদনার ব্যাপারে আগ্রহী থাকেন। তাহলে আপনি পার্ট-টাইম থেকে শুরু করে ফুল টাইম ভিডিও এডিটিং-এর কাজগুলোও দেখতে পারেন।

১২. কনটেন্ট ক্রিয়েটর

কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের কাজ থাকে মূলত প্রমোশন ও বিনোদনের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ডোমেইনের উপর কনটেন্ট প্রস্তুত করা। আর এই কাজের বেশিরভাগটাই ভিডিও, রিটেন কিংবা ভিজ্যুয়াল কন্টেন্ট হয়ে থাকে। এই অনলাইন পেশাটির জন্য শক্তিশালী অনলাইন প্রেসেন্স থাকাটা খুবই জরুরি।

১৩. পিএইচপি/এইচটিএমেল এক্সপার্ট

HTML, PHP, ও CSS হল ওয়েবসাইট ডিজাইনিং ও ডেভেলপমেন্টের জন্য ব্যবহৃত সাধারণ কম্পিউটিং ল্যাঙ্গুয়েজ। আর এই ভাষাগুলো সম্পর্কে যদি ভাল জ্ঞান থাকে। তবে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে আপনি আরামসে চাকরি পেয়ে যেতে পারেন। 

আইটি সেক্টরের আকস্মিক উত্থানের ফলে বিশেষ করে PHP এক্সপার্টদের চাহিদা চরমে উঠেছে। যে কারণে, এখান থেকে ফুল-টাইম কিংবা পার্ট-টাইম অর্থ উপার্জন করাটাও বেশ সহজ হয়ে উঠেছে।

১৪. অনলাইন টিচিং

শিক্ষকতার ব্যাপারে প্যাশন থাকলে আপনি ঘরে বসেই আপনি অর্থ উপার্জের সুযোগ পেয়ে যেতে পারেন। এই অনলাইন টিচিং আপনার অনেক সময় এবং টাকা বাঁচাতে পারে। 

ভাল ইন্টারনেট সংযোগ, বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান এবং সঠিক যোগাযোগের দক্ষতা থাকলেই আপনি একজন দক্ষ অনলাইন শিক্ষক হয়ে পারেন।

১৫. সেলস

আপনার কথা বলার ধরণে যদি তুমুল দক্ষতা থাকে। তবে সেলস হয়ে উঠতে পারে আপনার ব্যাপক অর্থ উপার্জনের অন্যতম সেরা মাধ্যম। এখানে আপনার পণ্য বা পরিষেবা বিক্রি করার ক্ষমতার ভিত্তিতে যথেষ্ট অর্থ প্রদান করা হয়ে থাকে।

১৬. গ্রাফিক ডিজানিং

একজন গ্রাফিক ডিজাইনার নানান প্রচারমূলক প্ল্যাটফর্মের জন্য পোস্টার এবং বিজ্ঞাপন পেজ তৈরির করার কাজ করে থাকে। এই পেশাতে সৃজনশীলতা এবং কম্পিউটার দক্ষতাই হচ্ছে মূল বিষয়। আর ডিজাইনিং-এর প্রতি আগ্রহী যেকোন মানুষই এই পেশার সাথে যুক্ত হতে পারে।

১৭. কোডার

কোডিং আপনার নেশা হলে এটাকে আপনার পেশাতে পরিণত করতে বেশি পরিশ্রম করতে হবে না। আপনি একজন ফ্রিল্যান্স কোডার হিসেবেই অনলাইনে চাকরি করতে পারেন। আপনি যদি লজিক গেটগুলোর ব্যাপারে ও অংকে পারদর্শী হয়ে থাকেন। 

তবে আপনি একজন পেশাদার কোডার হওয়ার দক্ষতা রাখেন। বর্তমান মার্কেটে কোডারদের বিশাল চাহিদাও রয়েছে। তাই আপনি একজন পার্ট-টাইমার হিসেবে কোডারের চাকরিতে মাসিক অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবেন।

১৮. অনলাইন মেন্টর

এখনকার জটিল জীবনযাত্রায় বহু মানুষেরই বিভিন্ন পরামর্শদাতার প্রয়োজন হয়ে থাকে। তবে মানুষজন তাদের ব্যস্ত সময়সূচী থেকে সময় বের করে কোন পরামর্শ নেওয়ার পিছনে সময় বিনিয়োগ করতে অনেক সময়েই অপারোগ হন। 

তাই বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষই ভ্রমণে তাদের সময় এবং অর্থ বাঁচাতে অনলাইন মেন্টরশিপ বেছে নিয়ে থাকে। এই কারণেই অনলাইন মেন্টরশিপ হয়ে উঠতে পারলে আপনি মাসে ভাল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

১৯. মার্কেট রিসার্চারস

একজন মার্কেট রিসার্চার, সমগ্র ব্যবসায় বিশ্লেষণ করে সেখানে ব্যবসায়িক পরিকল্পনার ত্রুটিগুলো বের করতে সহায়তা করে থাকে। মার্কেট অনুসন্ধানের কাজ আপনার মস্তিষ্কের নমনীয়তা বাড়ায় ও নতুন নতুন ব্যবসায়িক কৌশল ও ধারণা নিয়ে আসতে সাহায্য করে থাকে। 

আপনি যদি কমার্স ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসে থাকেন। তাহলে এই চাকরির জন্য আপনি একদম উপযুক্ত বলে বিবেচিত হবেন।

২০. ইউটিউবার

আমাদের চারপাশে আমরা অনেক ইউটিউবারেরই নাম শুনে থাকি। আর শুনতে অনেক বেশি মজাদার ও কমনীয় হলেও আসলেই ইউটিউবে ক্যারিয়ার গড়ে তোলা খুব একটা সহজ বিষয় নয়। এখানে প্রচু প্রতিযোগিতা রয়েছে। 

একজন সফল ইউটিউবার হতে গেলে অসামান্য সৃজনশীলতা, ভিডিও বানানো ও সম্পাদনা সম্পর্কে জানা এবং প্রচুর পরিমাণ ধৈর্য্যের প্রয়োজন। তবে একবার ইউটিউবার হিসেবে নাম করতে পারলে, অর্থের পাশাপাশি অনেক প্রতিপত্তিও আসে।

আমাদের শেষ কথা, আমার আজকের ২০,০০০ টাকা মাসিক আয়ের উপায়গুলো নিয়ে লেখা আর্টিকেলটি এখানেই শেষ। আপনিও যদি মাসে বিশ হাজার টাকা ইনকাম করার উপায় খুঁজেন। 

তাহলে অবশই ওপরে বলা উপায় গুলো করে দেখতে পারেন। আর এরকম জানা অজানা তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট এর সাথে থাকুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url