ইমেইল কি - ইমেইল এর ব্যবহার

ই-মেইলের পূর্ণ অর্থ হল ইলেকট্রনিক মেইল৷ ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইসের মধ্যে তথ্য আদান প্রদান ব্যবস্থাকেই মেইল বলে৷ ই-মেইল তথ্য আদান প্রদান আইপি বা ইন্টারনেট প্রাটোকল ব্যবহার করে থাকে।

এবং এতে টেক্সট বার্তার সাথে অ্যাটাচমেন্ট আকারে নানা ফাইলও (ডকুমেন্টস, ছবি, অডিও, ভিডিওসহ যেকোন ডিজিটাল ফাইল) পাঠানো যায়৷ ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত থাকা অবস্থায় সারা বিশ্বের যেকোন স্থানেই মেইল পাঠানো যায়৷ 
ইমেইল
ইমেইল
এটিকে ইলেকট্রনিক পদ্ধতির পত্র আদান প্রদান ব্যবস্থা হিসেবে চিহ্নিত করা করা যেতে পারে৷ পত্র যোগাযোগের জন্য যেমন একটি নির্দিষ্ট ঠিকানা প্রয়োজন তেমনি ই-মেইলের জন্যও ই-মেইল অ্যাড্রেস ব্যবহৃত হয়। 

যা প্রত্যেক ব্যবহারকারীর জন্য ইউনিক হয়ে থাকে৷ নিরাপত্তার জন্য গোপন পাসওয়ার্ড দ্বারা সুরক্ষিত রাখা হয় প্রত্যেকের ই-মেইল অ্যাকাউন্টকে৷ একটি ই-মেইল অ্যাড্রেসের দুটি অংশ থাকে। 

যার প্রথম অংশটি ব্যবহারকারীর পরিচিত এবং শেষাংশটি ডোমেইন নেম হিসেবে পরিচিত৷ যেমনঃ mrahman sys@ gmail.com একটি ই-মেইল অ্যাড্রেস যার mrahman sys অংশটি ব্যবহারকারীর পরিচিত এবং gmail.com অংশটি ডোমেইন নেম হিসেবে চিহ্নিত হবে৷ 

ই-মেইল অ্যাড্রেসের এই দুই অংশকে @ চিহ্ন দ্বারা পৃথক করা হয়ে থাকে৷ নিচের চিত্রে ই মেইল কীভাবে কাজ করে তা প্রদর্শিত হলঃ

হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের সমন্বয়ে গঠিত ই মেইলের ডিজিটাল ডাক ব্যবস্থা বর্তমানে সনাতন ডাক ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করেছে৷ এই যোগাযোগ ব্যবস্থাটি আক্ষরিক অর্থেই বিদ্যুৎ গতিতে যে কোন তথ্য নির্ভুলভাবে প্রাপক ও প্রেরকের মধ্যে বিনিময় করতে সক্ষম৷ 

ই-মেইল অর্থ ও সময় যেমন সাশ্রয় করে তেমনি বর্তমানে এই যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষ এতটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে যে ডাক বিভাগটি প্রায় ইতিহাসের বিষয়ে পরিণত হতে চলছে৷ 

একটি ই-মেইল বার্তা তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত৷ বার্তার খাম বা মোড়ক বার্তার হেডার বা মূল (যেটিতে বার্তা কোথায় এবং কার কাছে থেকে এসেছে সেই তথ্য থাকে) এবং মূল বার্তা৷ 

হেডার মেইল নিয়ন্ত্রণের তথ্য বহন করে যেটিতে কমপক্ষে একটি প্রেরকের ই-মেইল ঠিকানা থাকতে হয়৷ তবে একাধিক প্রাপকের ঠিকানাও একই সাথে লিখে তাদের কাছে একই সময়ে ই মেইল করা যায়৷ 

এখানে আরও বিস্তারিত তথ্যও থাকে যেমনঃ হেডারে বিষয়বস্তুর জন্য একটি ফিল্ড এবং বার্তা প্রেরণের তথ্য গ্রহণের তথ্য ইত্যাদি৷

ইমেইল এর মানে কি? 

ই-মেইল হল Electronic Mail এর সংক্ষিপ্ত রূপ। ‘E-mail’ এর আবিষ্কারক হলেন রেটমলিনসন। ই-মেইলের মূল হচ্ছে একটি কম্পিউটার হতে অন্য কম্পিউটারে বা ফ্যাক্স মেশিনে তথ্য প্রেরণ বা গ্রহণ করা। অথবা প্রেরণ ও গ্রহণ দুটিই করা। 

সাধারণত মেইলের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান করতে চাইলে তার একটি ই-মেইল ঠিকানা থাকা আবশ্যক। আর এ ঠিকানা User name@Domain নিয়ে গঠিত হয়ে থাকে। 

যেমনঃ atiqnet2041@.com একটি E-mail ঠিকানা । এখানে উল্লেখ্য যে ই-মেইল ঠিকানা থাকে। তা E-mail ঠিকানায় @ চিহ্নের পরের অংশটি হল ডোমেইনের নাম। 

ডোমেইন নেইম সাধারণত (.) চিহ্ন দ্বারা কয়েকটি অংশে বিভক্ত হয়। @ চিহ্নের পরের প্রথম শব্দটিকে হোস্ট মেশিনের নেইম বলা হয়ে থাকে। আর উক্ত ঠিকানায় gmail হল হোস্ট মেশিনের নাম।

ই-মেইল আদান প্রদানের জন্য যা প্রয়োজন?

পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে ই মেইল আদান প্রদানের জন্য যে রিসোর্সগুলো প্রয়োজন তা হলঃ
  • একটি কম্পিউটার বা স্মার্টফোন।
  • ইন্টারনেট সংযোগ।
  • ই-মেইল বার্তা তৈরি এডিট গ্রহণ ও প্রেরণসহ ই মেইল। 
  • ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার৷ 
  • বিশ্বব্যাপী বহুল ব্যবহৃত এমন দুটি ক্লাউড বেজ ই-মেইল সফটওয়্যার প্ল্যাটফরম হল জিমেইল এবং ইয়াহু মেইল৷
  • প্রেরক ও প্রাপকের ই-মেইল অ্যাড্রেস।

Email এর কয়টি অংশ ও কি কি?

ই-মেইল ঠিকানা User name @ Domain এ দুটি অংশ নিয়ে গঠিত হয়। আর @ চিহ্নের পরের অংশটি হচ্ছে (Domain name)।

ই-মেইল ঠিকানা ( E-mail Address)

ই-মেইল ঠিকানা হল ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ করার একটি Address কিংবা ঠিকানা। যেমনঃ কারও কাছে কোন চিঠি পৌঁছাতে হলে তার একটি পোস্টাল ঠিকানা থাকা দরকার হয়। 

ঠিক তেমনিভাবে এই ঠিকানাটি @ চিহ্ন (at sign) দ্বারা দুইভাগে বিভক্ত হয়। প্রথম ভাগে অর্থাৎ @ চিহ্নের আগের অংশে User name অর্থাৎ ব্যবহারকারীর নাম থাকে।

১৯৭২ সালে সর্বপ্রথম ই-মেইল ঠিকানায় @ চিহ্ন (at sign) ব্যবহার করা হয়। @ চিহ্ন (at sign) ব্যতীত বর্তমানে কোন E-mail Address হতে পারে না। অর্থাৎ @ চিহ্নটি ইমেইলের ঠিকানায় অবশ্যই থাকতে হবে। 

যদিও ১৯৭১ সালে ই-মেইল ব্যবস্থা সর্বপ্রথম চালু হয়। কিন্তু ইমেইল ঠিকানায় @ চিহ্ন (at sign) টি সর্বপ্রথম ব্যবহার করা হয় ১৯৭২ সালে দিকে।

ই-মেইল সার্ভার (E-mail Server)

নেটওয়ার্কের যে কম্পিউটারটি যা ভার্চুয়াল পোস্ট অফিস হিসেবে কাজ করে তাকে ই-মেইল সার্ভার বা সংক্ষেপে মেইল সার্ভার বলা হয়। মেইল সার্ভারে POP কিংবা IMAP ও STMP প্রোটোকল ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

cc এর পূর্ণরূপ কি?

Cc: Cc এর পূর্ণরূপ হল Carbon copy । অর্থাৎ ইমেইলের Cc ঘরে যেসব ঠিকানা টাইপ করা হয়, যাদের নিকট প্রেরক ই-মেইল কপি পাঠাতে চায়। এখানে ই-মেইল ঠিকানাগুলো পরপর কমা দিয়ে টাইপ করতে হয়। 

তাছাড়া যতজনের নিকট প্রেরক ইমেইলটি পাঠিয়েছে, তা ইমেইল গ্রহণকারী সবাই জানতে পারে।

bcc এর পূর্ণরূপ কি?

Bcc এর পূর্ণরূপ হল (Blind carbon copy)। Bcc এর ঘরে সেসব ঠিকানা টাইপ করা হয় যাদেরকে প্রেরক ই-মেইল কপি পাঠাতে চায় কিন্তু প্রাপকদের জানাতে চায় না কাকে কাকে এর কপি পাঠানো হয়েছে। 

মূল কথা হল Cc এবং Bcc এর কাজ প্রায় একই রকম ধরনের হয়। তবে Cc যাদের উল্লেখ থাকে ই-মেইলের প্রাপক ডকুমেন্টের শেষে তাদেরকে প্রত্যেকের ঠিকানা ছাপানো অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়।

অর্থাৎ প্রাপক ই-মেইলটি পেয়ে বুঝতে পারে কাকে কাকে এর কপিটি প্রেরণ করা হয়েছে। কিন্তু Bcc তে টাইপ করা ঠিকানাসমূহ ডকুমেন্টের সাথে যায় না। যার ফলে প্রাপক জানতে পারবে না কাকে কাকে প্রেরক এই ই-মেইলটি পাঠিয়েছেন।

অ্যাটাচমেন্ট (Attachment)

অ্যাটাচমেন্ট হল  ই-মেইল সিস্টেমেরই একটি অংশবিশেষ। ইহা একটি আলাদা ফাইলকে কোন ই-মেইলের সাথে সংযুক্ত করে পাঠাতে চাইলে ইমেইলের ‘Attachment’ অপশনে ক্লিক করে সেই ফাইলকে যুক্ত করতে হয়। 

তাছাড়া অ্যাটাচমেন্ট ফাইল বিভিন্ন রকমের হতে পারে। যেমনঃ পাওয়ার পয়েন্ট ফাইল, ওয়ার্ড ছবি, ভিডিও, ডকুমেন্ট ইত্যাদি।

Spam Mail কি?

ভুয়া ও অযাচিত মেইলকে Spam Mail বলা হয়। যেকোন Email আইডিতে Spam নামে একটি ফোল্ডার থাকে। যেখানে ভুয়া এবং অযাচিত মেইল জমা হয় ।

বিভিন্ন ধরনের ওয়েব মেইল (Web mail) কিংবা ওয়েব বেজড মেইল (Web based mail) সেবা?

  • জিমেইল (Gmail)
  • ইয়াহুমেইল/ওয়াইমেইল (Yahoomail/Ymail)
  • এওএলমেইল (AOLmail)
  • হটমেইল (Hotmail)

ই-মেইলের সুবিধা?

  • প্রচলিত ডাক ব্যবস্থার তুলনায় ই-মেইল অত্যন্ত দ্রুত গতির।
  • ইহা ব্যবহার করা সহজ হয়।
  • সহজে পাঠানো যায় ও গ্রহণ করা যায় এবং কম্পিউটারে সংরক্ষণ করে রাখা যায়৷
  • সবচেয়ে দ্রুত মুহূর্তেই পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে পাঠানো যায়৷
  • মেইলের ভাষা সহজ৷
  • যেকোন গ্রুপের লোকজনের সাথে দ্রুত যোগাযোগ করা যায়৷
  • একই মেইল সিসি করে অনেকের কাছে পাঠানো যায়৷
  • কাগজের ব্যবহার হয় না বিধায় পরিবেশের জন্য সঙ্গে সহায়ক৷
  • ই-মেইলের মাধ্যমে সহজেই খুব কম খরচে কোন প্রাডাক্ট মার্কেটিং করা যায়৷
  • সাধারণ প্রাপ্ত মেইলের বিপরীতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোন উত্তর পাঠানোর ব্যবস্থা করা যায়।

ই-মেইলের অসুবিধা?

  • গ্রাহকের জন্য ই-মেইল গ্রহণ করতে ইন্টারনেট সংযোগের প্রয়োজন হয়।
  • ই-মেইল, স্প্যাম তথা জাস্ক ই-মেইল হতে পারে। 
  • ফিশিং এর মাধ্যমে কোন ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করা সম্ভব। 
  • প্রেরিত ই-মেইলটি পড়া হবে না তার কোন নিশ্চয়তা নেই, যতক্ষণ না গ্রাহক তার অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করেন এবং তা পড়েন।
  • ই-মেইলের সাথে ভাইরাস ফাইল সংযুক্তি (অ্যাটাচমেন্ট) হিসেবে আসতে পারে।

ই-মেইল শব্দের পূর্ণরূপ কি?

ই-মেইল শব্দের পূর্ণরূপ হচ্ছে ইলেকট্রনিক মেইল।

ই-মেইল ঠিকানা খুলতে কি প্রয়োজন?

কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন হয়।

Spam কোথায় থাকে?

স্প্যাম থাকে ই-মেইল একাউন্টে।

ই-মেইল খোলার সাইট কোনটি?

ই-মেইল খোলার সাইট হল ইয়াহু ডট কম।

ই-মেইল ঠিকানা খুলতে প্রথমে কোন কাজটি করতে হয়?

প্রথমে Sign up-এ ক্লিক করতে হয়।

ই-মেইলের সাথে কোন ফাইল সংযুক্ত করে পাঠাতে চাইলে কোনটির উপর ক্লিক করা হয়?

ই-মেইলের সাথে কোন ফাইল সংযুক্ত করে পাঠাতে চাইলে Attach এর উপর ক্লিক করা হয়।

ইমেইল লেখার জন্য একটি সাদা পাতা আসে কোনটির উপর ক্লিক করলে?

ইমেইল লেখার জন্য একটি সাদা পাতা আসে Compose উপর ক্লিক করলে। 

ই-মেইল ঠিকানা কোন টেক্সট বক্সে লিখতে হয়?

To টেক্সট বক্সে লিখতে হয়।

ই-মেইল ঠিকানা খোলার পদ্ধতি বর্ণনা কর?

ই-মেইল ঠিকানা খুলতে প্রথমেই আপনাদেরকে ঠিক করতে হবে  কোন ই-মেইল সেবাদাতার মাধ্যমে ই-মেইল ঠিকানাটি খুলবেন। বর্তমানে ওয়েবে অনেকগুলো ই-মেইল খোলার সাইট আছে। 

যেমনঃ জি মেইল সার্ভিস, ইয়াহু-মেইল সার্ভিস ইত্যাদি। এসব সাইটে ই-মেইল ঠিকানা খুলতে কম্পিউটারের মাধ্যমে ইন্টারনেটে যুক্ত হতে হবে। এরপর কম্পিউটারের ব্রাউজারটি চালু করে পছন্দের সেবাদাতা সাইটটিতে প্রবেশ করতে হবে। 

তাছাড়া সকল সাইটেই প্রবেশের পর আমাদের নতুন ই-মেইল ঠিকানা (Account) খুলতে সাইন আপ (Sign Up) কিংবা নিবন্ধন করতে হবে। আর এ সাইন আপের নিয়ম সব সাইটেই কিছুটা ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় একই ধরনের হয়। 

সব সাইটেই একটা ফর্ম পূরণ করতে হবে। তাছাড়া ফর্ম পূরণের পর সাইটটির নির্দেশনা অনুসরণ করে শেষে Create Account এ ক্লিক করলেই হয়ে গেল ই-মেইল একাউন্ট বা ঠিকানা। 

আইডি (ID) ও পাসওয়ার্ডটি (Password) গোপনীয়ভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। অন্যথায় যেকেউ একাউন্টে প্রবেশ করতে পারবে। ই-মেইল ঠিকানা খুলতে ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করতে হবে। তবে বর্তমানে ই-মেইলে বাংলাতেও চিঠি আদান প্রদান করা যায়।

ই-মেইল ঠিকানায় @ এর আগে কি থাকে?

ব্যবহারকারীর নাম থাকে।

ই-মেইল অ্যাড্রেসে কয়টি ডট ব্যবহার করা যায়?

১টি।

ই-মেইল ঠিকানায় @ এর পরে কি থাকে?

হোস্ট নেম থাকে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url