তক্ষক চেনার উপায় - তক্ষক কোথায় বিক্রি হয়
দুলর্ভ ও দামী একটি প্রাণী হচ্ছে তক্ষক। তক্ষক এর ইংরেজি Gecko, এর বৈজ্ঞানিক নাম Gekko gecko যা গেকোনিডি গোত্রের একটি গিরগিটি প্রজাতি।
তক্ষক টিকটকের মতো দেখতে হয়ে থাকে যা এক ধরণের সরিসৃপ জাতীয় প্রাণী। তক্ষক এর বসবাস বন, মরুভূমি, পাহাড়ী এলাকা এবং মানুষের বাড়ি হয়ে থাকে।
তক্ষক |
তক্ষক বিপদের সময় তাদের লেজ ছুঁড়ে ফেলে যা তাদের এক অদ্ভূদ ক্ষমতা। এদের লেজ লম্বা এবং টেপারিং বা ছোট এবং ভোঁতা হয়ে থাকে।
তক্ষকের বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে এর ১,৮৫০ টিরও বেশি প্রজাতির তক্ষক বিশ্বব্যাপী দেখা যায়। Coleonyx variegatus, ওয়েস্টার্ন ব্যান্ডেড তক্ষক, দক্ষিণ-পশ্চিম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং উত্তর-পশ্চিম মেক্সিকোতে বেশি দেখা যায়।
Cyrtopodion brachykolon, বাঁকানো আঙ্গুলের মতো তক্ষক যা উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে পাওয়া যায়। কিন্তু এই প্রাণীটির এত দাম কেন বা তক্ষক এর দাম কত চলুন জেনে নেই।
হাঁস পা তক্ষক এর দাম কত?
হাঁস পা তক্ষক দেখতে ধূসর-সবুজ অথবা নীলচে-ধূসর রঙ্গের হয়ে থাকে। এই তক্ষকটি সহজে পাওয়া যায় না কিন্তু এর রয়েছে আকাশছোঁয়া দাম। তক্ষক এর দৈর্ঘ্যে ১.৬ সেন্টিমিটার থেকে ৬০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।হাঁস পা তক্ষকের ওজন হয়ে থাকে ১৫০ থেকে ৪০০ গ্রাম। জন্মের সময় ছানা সাধারণত নয় সেন্টিমিটারের হয়ে থাকে। এটি যেমন দুলর্ভ ঠিক তেমনি এর চাহিদাও বেশি। জন্মের পর থেকে হাঁস পা তক্ষকের ওজন দেড়শ গ্রাম হলেই তার দাম হবে “হাজার কোটি” টাকা হয়ে থাকে।
তক্ষক কোথায় বিক্রি হয়?
তক্ষক সাধারণত বিদেশী বিভিন্ন বায়ারের কাছে বিক্রি করা হয়। একটি তক্ষক বিক্রির জন্য অত্যন্ত ১৬ ইঞ্চি লম্বা হতে হয়।যার কাছে তক্ষক থাকবে তিনি সেটির উচ্চতা মেপে তারপর ভিডিও করে বায়ারকে পাঠাবেন তারপর বায়ার তার বাড়িতে গিয়ে সব কিছু পরীক্ষা করে তারপরই তক্ষকটি কিনে থাকেন।
তক্ষক কামড়ালে কি হয়?
সাধারণত তক্ষক কামড় দেয় না কিন্তু যদি উত্ত্যক্ত করা হয় তাহলে কামড়াতেও পারে। আর কামড়ালে তেমন চিন্তার কোন বিষয় নেই, এতে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।কামড়ের মাধ্যমে যদি চামড়া উঠে আসে বা রক্তপাত হয় তাহলে দ্রুত গরম পানি আর এন্টিব্যাক্টেরিয়াল সাবান দিয়ে জায়গাটি ভালোভাবে ধুঁয়ে এন্টিবায়োটিক ঔষুধ দিয়ে তারপর ব্যান্ডেজ করতে হবে। অন্যান্য তক্ষক ততটা ক্ষতিকর না হলেও বন্য তক্ষক থেকে সাবধান থাকা উচিত।
তক্ষক এর এত দাম কেন?
তক্ষক এর দাম কত এই উত্তর তো আমরা পেলাম কিন্তু এই তক্ষক এর এত দাম কেন তা জানবো এখন। বিভিন্ন চোরাকারবারিরা সারাবিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্নভাবে তক্ষক ক্রয় করে এর চাহিদাসম্পন্ন মানুষের কাছে বিক্রি করে থাকে।একটি অরিজিনাল তক্ষকের দাম ৩০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। একটি তক্ষকের দাম কত হবে তা নির্ভর করে এর বয়স ও ওজনের উপর। ৩০০ গ্রাম ওজনের একটি তক্ষকের মূল্য হতে পারে ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলাবা বা ১৭ কোটি টাকারও বেশি হতে পারে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো তক্ষকের এত দাম কেন? চিকিৎসা ক্ষেত্রে তক্ষক এর চাহিদা ব্যাপক। তক্ষক সাধারণত চীনা ঔষুধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো তক্ষকের এত দাম কেন? চিকিৎসা ক্ষেত্রে তক্ষক এর চাহিদা ব্যাপক। তক্ষক সাধারণত চীনা ঔষুধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
AIDS ও ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি রোগের প্রতিষেধক তৈরিতেও এটি ব্যবহার করা হয় বলে জানা গেছে। তাই এর দাম এত বেশি হয়ে থাকে।
চিতাবাঘ তক্ষক ১০ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে বন্দী অবস্থায় যদি উন্নত স্বাস্থ্যসেবা, উপযুক্ত পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়ানো হয়। বন্য অঞ্চলে, একটি চিতাবাঘ তক্ষক সাধারণত ৬ - ৮ বছর পর্যন্ত বাঁচে।
তক্ষক কত বছর বাঁচে?
তক্ষক সাধারণত দশ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকে এবং এরা তিন বছর বয়সেই প্রজননক্ষম হয়ে উঠে। এরা সাধারণত নিশাচর প্রাণী কিন্তু দিনের বেলা এরা নির্দিষ্ট শব্দে ডেকে থাকে যার ফলে এদের ধরা সহজ হয়। প্রজনন সময় ছাড়া এরা একা থাকতেই বেশি স্বাছদ্যবোধ করে।চিতাবাঘ তক্ষক ১০ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে বন্দী অবস্থায় যদি উন্নত স্বাস্থ্যসেবা, উপযুক্ত পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়ানো হয়। বন্য অঞ্চলে, একটি চিতাবাঘ তক্ষক সাধারণত ৬ - ৮ বছর পর্যন্ত বাঁচে।
তক্ষক তাড়ানোর উপায়?
তক্ষক তাড়ানোর জন্য দুটি প্রধান অপরিহার্য তেল হল ইউক্যালিপটাস এবং পেপারমিন্ট। তক্ষকরা এই তেলের গন্ধগুলিকে তীব্রভাবে ঘৃণা করে।তাই তক্ষক তাড়ানোর জন্য আপনার প্রয়োজন হবে একটি ৮০z বা ১৬০z স্প্রে বোতল পানি দিয়ে ভরা ভরা এবং আপনার নির্বাচিত অপরিহার্য তেলের ১৫ ফোঁটা তাতে মেশানো তারপর এগুলো ঘরের প্রবেশদ্বারের আশেপাশে স্প্রে করে দেওয়া।
তক্ষককে প্রতিরোধ করার জন্য আপনি ঘরোয়া উপায়ও অনুসরণ করতে পারেন। যেমন: রসুন আর লবঙ্গ- রসুনের তীব্র গন্ধ শুধু কিছু মানুষের জন্যই নয়, এটি তক্ষকের জন্যও বেশ বিরক্তকর!
তক্ষককে প্রতিরোধ করার জন্য আপনি ঘরোয়া উপায়ও অনুসরণ করতে পারেন। যেমন: রসুন আর লবঙ্গ- রসুনের তীব্র গন্ধ শুধু কিছু মানুষের জন্যই নয়, এটি তক্ষকের জন্যও বেশ বিরক্তকর!
প্রবেশপথের চারপাশে একটি রসুন আর লবঙ্গ রেখে দিন যেন তক্ষক এর তীব্র গন্ধ পেলে প্রবেশদ্বার দিয়ে ঘরে প্রবেশ করতে না পারে। তক্ষক তাড়ানোর জন্য আপনি পেঁয়াজও ব্যবহার করতে পারেন।
প্রথমে পেঁয়াজ কেটে ফেলুন এরপর আপনার আউটডোর ইউনিটের (প্রবেশদ্বারের) চারপাশে রাখুন এবং এই গন্ধ পেলে তক্ষক তৎক্ষণাত পালিয়ে যাবে।
তক্ষক কি বিষাক্ত?
এক কথায় উত্তর হচ্ছে না, তক্ষক বিষাক্ত প্রাণী নয়। অনেকেই ভুল করে একে বিষাক্ত প্রাণী মনে করলেও এরা প্রকৃত অর্থে বিষাক্ত নয়।অন্যান্য টিকটিকি প্রজাতির তুলনায়, তক্ষকের কামড় খুব কমই আহত করে থাকে, এটি কামড় দিলে শুধুমাত্র ত্বকে একটি ছোট আঁচড় ফেলে। তাদের দাঁত আছে, কিন্তু মানুষের ত্বকে প্রবেশ করার ক্ষমতা তাদের খুব কমই আছে।
তাই এটি তেমন ক্ষতিকর নয় পাশাপাশি এগুলো বিষাক্তও না। এশিয়ার দেশগুলোতে প্রায় ৬০০ প্রজাতির তক্ষক বাস করে। বাংলাদেশেও এর প্রায় ২ প্রজাতি পাওয়া যায়।
শেষকথা
আমাদের আজকের পোস্টের টাইটেল ছিল তক্ষক এর দাম কত। তক্ষক যে একটি দামী প্রাণী তা তো মোটামুটি যারা এটা সম্পর্কে ধারণা রাখেন কিন্তু এর তক্ষক এর দাম কত তা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নেই অনেকের।বিশ্বের একটি চাহিদাসম্পন্ন প্রাণী হচ্ছে তক্ষক। এর দাম এত চওড়া যে এটি কোন সাধারণ মানুষের পক্ষে কেনা সম্ভব নয় একমাত্র যারা বড় বড় ডিল করে থাকেন তারাই এটি ক্রয় করতে পারেন।
বর্তমান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url